বাজারে অনেক রকমের দক্ষতার সদাই হয়। মানুষ আজ কত দক্ষ হয়ে ওঠছে, সেটি বিশ-ত্রিশ বছর আগের মানুষের সাথে তুলনা করলেই বুঝা যায়। কিন্তু পরিতাপের বিষয়টি হলো, মানুষ একদিক দিয়ে দক্ষ হচ্ছে, অন্যদিক দিয়ে সম্পর্কগুলো নষ্ট হচ্ছে। বন্ধুত্ব নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, পরিবার ভেঙ্গে যাচ্ছে, ডিভোর্সের হার বেড়ে যাচ্ছে। উচ্চাকাঙ্ক্ষী মানুষের বড় ক্ষতিটি হলো, নিজের ক্যারিয়ার ধ্বংসের মুখে পড়ে যাচ্ছে। তাই তথাকথিত দক্ষতাগুলো থেকে নিজেকে একটু ভিন্ন অবস্থানে রাখা উচিত।
পুনরাবৃত্তি হলেই দক্ষতা চলে আসে। অথবা বাস্তব জীবনে চর্চার মাধ্যমে আসে। কিন্তু কিছু দক্ষতা আছে, যা কর্মজীবীদের প্রশিক্ষণ ম্যানুয়ালে তেমন নেই। কিছু বিষয় আছে, যা প্রচলিত অর্থে দক্ষতা নয়, কিন্তু দক্ষতার চেয়েও বেশি সুফল এনে দেয়। সেগুলো একটু কঠিন, কারণ শুধু পুনরাবৃত্তি দিয়ে হয় না, উপলব্ধি আর দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের মাধ্যমে আসে। কঠিন হলেও এসবের অনেক উপকারিতা আছে।
-চিন্তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারা-
-অপ্রয়োজনীয় আলাপ বা অন্যের সম্পর্কে গালগপ্পো নিয়ন্ত্রণ করতে পারা-
-নিজের কাজে মনসংযোগ রাখতে পারা-
-অন্যকে শোনা-
-কোন সময় চুপ থাকতে হয় সেটি বুঝতে পারা-
-নিজের সাথে ইতিবাচক কথোপকথন-
-অভ্যাসের ধারাবাহিকতা-
-অন্যের কাছে সাহায্য চাওয়া-
-সময় ব্যবস্থাপনা-
-অন্যের প্রতি সহানুভূতি থাকা-
-ঘুমের ওপর নিয়ন্ত্রণ থাকা-
✿✿✿✿✿✿✿

১১) চিন্তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারা
আমরা আমাদের চিন্তারই ফসল। আমরা যা ভাবি যেভাবে ভাবি, আমাদের আচরণ তা-ই প্রকাশ করে। প্রথমত চিন্তাকে যাচাই করতে হয়, যেন সেখানে ক্ষতিকারক কিছু না থাকে। চিন্তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে, আমরা যা করতে চাই তা করতে পারি।
কিন্তু সকলেই যা করতে চায় তা করতে পারে না। এজন্য বলা হয়, সবাই ভালোভাবে ভাবতে পারে না। অথবা, সবাই ভালোভাবে তাদের চিন্তাকে প্রকাশও করতে পারে না। চিন্তাকে সুষ্টুভাবে প্রকাশ করতে পারলেই একে নিয়ন্ত্রণ করার দক্ষতা চলে আসে।
এর সাথে আরেকটি দক্ষতা জড়িয়ে আছে: সকল অবস্থায় সন্তুষ্ট থাকার দক্ষতা। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মানবিক দক্ষতা। মিথ্যা আত্মসন্তুষ্টি নয়, কিন্তু পরিস্থিতিকে ঠাণ্ডা মাথায় মূল্যায়ন করে করণীয় নির্ধারণ করতে পারা।
অতীত অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাকে শুদ্ধ করাই হলো ভালো চিন্তার ফল।

১০) অপ্রয়োজনীয় আলাপ বা অন্যের সম্পর্কে গালগপ্পো নিয়ন্ত্রণ করতে পারা
মানুষের জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সম্পর্ক। টাকাকড়ি সবই হারালে পাওয়া যায়, কিন্তু সম্পর্ক হারালে তা কখনও পূর্বের অবস্থায় পাওয়া যায় না। তাই সম্পর্ক গড়া এবং রক্ষা করা জীবনের জন্য খুবই দরকারি।
সম্পর্ক রক্ষার জন্য প্রথম শর্ত হলো আস্থা। অনেকের মতে, এই আস্থাকে নষ্ট করে ফেলার জন্য প্রথমে দায়ি হলো, পেছনে কথা বলার অভ্যাস। কারও অনুপস্থিতিতে তার বিষয়ে নেতিবাচক আলোচনা করলে তাতে আস্থা নষ্ট হয়ে যায়।
কিন্তু মজার বিষয় হলো, অন্যের পেছনে কথা বলা খুবই মজার এবং তাতে দ্রুত কারও বন্ধু হয়ে যাওয়া যায়। প্রবাদে আছে, দু’জনের শত্রু একই ব্যক্তি হলে সেই দু’জনের মধ্যে বন্ধুত্ব অনিবার্য। কিন্তু সম্পর্ক ও আস্থার দিক থেকে এটি খারাপ একটি অভ্যাস। একজনের সাথে শত্রুতা অনেকের সাথে আস্থার সংকট সৃষ্টি করতে পারে। তাই অন্যের পেছনে আলাপ নিয়ন্ত্রণ করা একটি গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা।
এসব পরিস্থিতিতে যা করতে হয়, তা হলো নিশ্চুপ থাকা। কৌশলে অন্য বিষয়ে আলোচনাকে ঘুরিয়ে দেওয়া যায়। অথবা বলা যায়, “আমরা কি বিষয়টি বদলাতে পারি?” ক্রিড়া বা রাজনীতির মতো জনপ্রিয় অথবা গরম ইস্যু ছেড়ে দেওয়া যায় আলোচনার টেবিলে।


৯) নিজের কাজে মনসংযোগ রাখতে পারা
মনসংযোগ ধরে রাখা কঠিন কাজ। এ দক্ষতা অর্জন করতে কারও কারও জীবন শেষ হয়ে যায়।
নিজের কাজে লেগে থাকা কর্মক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি দক্ষতা। কারণ বর্তমান যোগাযোগ প্রচুক্তির এদিনে বাড়তি বিপত্তির শেষ নেই। মোবাইল ফোন, মেসেজ এলার্ট, সোস্যাল নেটওয়ার্কিং, ইমেইল, ইন্টারকমে সহকর্মী, বসের কল ইত্যাদি লেগেই আছে। যারা নিজের অবস্থানকে উন্নত করতে চান, তারা এসবকে দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আটকে রাখেন।
মনযোগ নষ্ট করার আরেকটি সহজাত প্রবণতা হলো অন্যের কাজে নাক গলানো। অন্যের দুর্বলতা নিয়ে মেতে থাকা। নিজের কাজে মনোযোগ দিলে অন্যদিকে মনোযোগ দেওয়া অসম্ভব।
অন্যের ভুলত্রুটি থেকে দৃষ্টি ফিরিয়ে নিজের দুর্বল দিকগুলোতে মনোযোগ দিলেই কেবল উন্নয়ন সম্ভব। মনসংযোগ ধরে রাখতে পারা একটি মূলবান দক্ষতা।

৮) অন্যকে শোনা
কিছু মানুষ আছে যারা শুনে অর্ধেক, বুঝে চারভাগের একভাগ এবং চিন্তা করে শূন্য পরিমাণ, কিন্তু প্রতিক্রিয়া করে দ্বিগুন। তারা কথা না বলে শুনতে পারে না। কিন্তু শোনা মানে হলো ‘চুপ থাকা’।
মানুষের সাথে সম্পর্কের শুরু হয় তাকে শোনার মধ্য দিয়ে।
শোনার মধ্য দিয়ে অনেক পেশাগত ও সামাজিক সমস্যার সমাধান এমনিতেই হয়ে যায়।
একটি ব্যস্ততম কল সেন্টারের ব্যবস্থাপককে জিজ্ঞেস করা হলো, কীভাবে তিনি অগণিত অভিযোগের নিষ্পত্তি করেন। ব্যবস্থাপক শুধু সংক্ষেপে জানালেন যে, ৮০% অভিযোগ শুধু শুনে এবং লিখে রাখাতেই সমাধান হয়। বাকি ১০% অভিযোগ শেষ হয় অপেক্ষায়। অর্থাৎ কিছুদিন পর্যবেক্ষণে রাখলেই ১০% অভিযোগের সমাধান হয়। মাত্র ১০% অভিযোগ নিয়ে বাস্তবিকভাবে তাদেরকে কাজ করতে হয়। এক্ষেত্রে মূল চাবিকাঠি হলো, গ্রাহকের অভিযোগগুলো পূর্ণ মনযোগ এবং সহানুভূতির সাথে শুনে যাওয়া।
শোনা একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক দক্ষতা যেটি নিয়মিত চর্চার মাধ্যমে আয়ত্ত করা যায়। এর নিজস্ব কিছু কৌশল আছে যা ব্যক্তিগত আগ্রহের মাধ্যমে নিজের আচরণে অন্তর্ভুক্ত করা যায়।

৭) কোন্ সময় চুপ থাকতে হয় সেটি বুঝতে পারা
কোন বিষয়ে রাগ অথবা অসন্তুষ্টি প্রকাশ করার মধ্য দিয়ে সব সমস্যার সমাধান হয় না। আমাদের চারপাশে অনেক সমস্যা আছে, যা একার পক্ষে সমাধান করা যায় না। আমাদের দরকার শুধু চুপ থাকা। অথবা উপযুক্ত সময়ের অপেক্ষা করা।
অনেক সময় কথা বলার চেয়ে নিশ্চুপ থাকাই সঠিক অবস্থান। তা না হলে পরে পস্তাতে হতে পারে। নিরবতাই উপযুক্ত উত্তর, এমন পরিস্থিতিতে আমরা সকলেই পড়ি। শুধু দরকার সেটি বুঝতে পারার।
চুপ থাকা মানেই দায়িত্ব এড়িয়ে চলা নয়, অন্যকে করার সুযোগ করে দেওয়া।
চুপ করা মানে অন্যকে কথা শেষ হতে দেওয়া।
চুপ করা মানে নিজের সঠিক মেজাজটুকু ফিরে পাবার জন্য সময় নেওয়া।
অনেক বিষয় আছে যা নিজের মধ্যে রাখাই উত্তম। আমরা যখন রাগ করি, অথবা যখন হতাশ হই, বা যখন বিরক্ত হই, তখন কিছু না বলাই ভালো। তাতে অপ্রয়োজনীয় বা অনাকাঙ্ক্ষিত মুখ থেকে বের হয়ে আসতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ কোন সিদ্ধান্ত না নিয়ে চুপ করে চিন্তা করাই উত্তম। মেজাজ স্বাভাবিক হলে সঠিক পদক্ষেপটি গ্রহণ করা যায়।
যখন আমরা উত্তেজিত হয়ে পড়ি, সেটা চরম দুঃখে অথবা চরম আনন্দের কারণে হতে পারে, তখন নিজের মুখকে বন্ধ রাখলে ভবিষ্যত আক্ষেপ থেকে নিজেকে বাঁচানো যেতে পারে।
কাজটি খুবই কঠিন, কিন্তু যারা এটি আয়ত্ত করতে পেরেছেন তারাই শুধু জানেন এর কত উপকার।

৬) নিজের সাথে ইতিবাচক কথোপকথন
অন্যেরা আমাদের সম্পর্কে কী ভাবে, অবশেষে সেটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায় না। গুরুত্বপূর্ণ হলো আমরা নিজেরা নিজের সম্পর্কে কী ধারণা পোষণ করি।
নিজের সম্পর্কে আত্মবিশ্বাস অর্জন করতে সময় লাগে। কিছু অমূল্য গুণ আছে যা অনেকেরই থাকে না। অথচ সেটি আমাদের দরকার। এজন্য নিজেদের সাথে ইতিবাচক থাকা খুবই প্রয়োজন।
ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে আত্মসমালোচনা করলে অভাবনীয় ফল আসে। এটি মূলত নিজের সাথে ‘নেতিবাচক কথা’ বলা। চর্চা করলে আস্তে আস্তে সেটি ইতিবাচক এবং প্রেরণামূলক আত্মকথনে রূপ নিতে পারে।

৫) অভ্যাসের ধারাবাহিকতা
কোন একটি বিষয়ে ধারণা নিতে চাইলে প্রয়োজন নিয়মিত চর্চা।
তাই প্রথমেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে বিষয়টি সময় দেবার মতো কি না। তাতে কাঙ্ক্ষিত ফল আসবে কি না।
যদি উত্তর হ্যাঁ-সূচক হয়, তবে শেষ না হওয়া পর্যন্ত লেগে থাকতে হবে। একেবারে বাদ দেবার চেয়ে বরং অনিয়মিতভাবে করাও উত্তম।
অনেকে নিজের অবস্থান ভালো করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করে, কিন্তু সেখানে পৌঁছে অথবা কাছাকাছি গিয়ে আন্তসন্তুষ্টিতে ভোগে। অথবা অলসতায় পড়ে যায়। এসবকে অতিক্রম করার জন্য যা কিছু করা হয়, সেটিই অভ্যাসের ধারাবাহিকতা।

৪) অন্যের কাছে সাহায্য চাওয়া
একটি চাকরির সাক্ষাৎকারে নিয়োগকর্তারা সাফ জানিয়ে দিলেন যে, “আপনি একাজটি করতে পারবেন না যদি অন্যের সাহায্য নেবার ইচ্ছা বা দক্ষতা না থাকে।” নিজের কাজে অন্যকে সম্পৃক্ত করতে পারা একটি দারুণ দক্ষতা।
চাকরিতে যোগদানের পর দেখা গেলো পূর্বে ব্যক্তি তার চাকরিটি হারিয়েছিলেন শুধু এজন্য যে, তিনি সমস্যাকে গোপন করতেন এবং কারও অংশগ্রহণের সুযোগ রাখতেন না।
অন্যের সাহায্য নেওয়ার মধ্যে অতিরিক্ত যে জিনিসটি পাওয়া যায় তা হলো, কাজের মধ্যে অংশীদারিত্ব বেড়ে যায়। এর সফলতা ও ব্যর্থতায় সকলেই ভাগ পায়। কাজটি হয়ে যায় সকলের। কিন্তু কৃতীত্ব একজনেরই, যিনি সকলকে সম্পৃক্ত করতে পারলেন।
এখানে আরেকটি বিষয় হলো, ঠিক ‘কখন অন্যের সাহায্য নেবার প্রয়োজন’ সেটি বুঝতে পারা। অন্যের অংশগ্রহণ কখন দরকার, সেটি পরিমাপ করতে পারা আরেকটি বিশেষ গুণ।
অন্যের সাহায্য গ্রহণের মধ্য দিয়ে আমরা অন্যের সামর্থ্যকে যেমন মাপতে পারি, তেমনি পারি নিজের নেতৃত্বদানের যোগ্যতাকে যাচাই করতে।
বিষয়টি একই সাথে অন্যের আস্থা অর্জনেরও সুযোগ করে দেয়। তাতে ক্রমেই আমাদের গ্রহণযোগ্যতা বেড়ে যায়। এটি একটি দক্ষতা বটে!

৩) সময় ব্যবস্থাপনা
সময় ব্যবস্থাপনার কোন সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি বা পথনির্দেশ আজও আবিষ্কৃত হয় নি। বিষয়টি পুরোপুরি ব্যক্তির একক সৃজনশীলতার ওপর নির্ভরশীল।
অন্যদিকে একটি প্রতিষ্ঠানের জুনিয়র থেকে সিনিয়র পদের ব্যক্তি সবারই সময় সীমাবদ্ধতাকে মেনে চলতে হয়।
ফলে সময় ব্যবস্থাপনা যারা ভালোমতো করতে পারেন, তারা সকলের মনযোগ আকর্ষণ করেন সহজেই। চাকরিদাতারাও এ গুণটিকে বিশেষভাবে মূল্যায়ন করেন এবং এটি কর্মী মূল্যায়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
একজন জৈষ্ঠ্য কর্মকর্তা বলেছিলেন, কাজটি করা নয়, কাজটির ‘পরিকল্পনা করাই’ আমার কাছে সবচেয়ে বেশি কঠিন লাগে। এর একটিই কারণ, কাজ অনুযায়ি সময়কে উপযুক্তভাবে ভাগ করতে পারা।
সময় ব্যবস্থাপনার সাথে সংশ্লিষ্ট আরেকটি দক্ষতা হলো, অগ্রাধিকার বুঝতে পারা। কোন্ কাজটি আগে, এবং কোন্ কাজটি পরে করতে হবে।
একটি ‘টু-ডু লিস্ট’ এখানে সহজ উপায়। তাহলে নিজের কাজগুলো ‘দৃশ্যমান পরিকল্পনায়’ রূপ নেয় এবং সময় ব্যবস্থাপনা অনেকটাই সহজ হয়ে যায়।

২) অন্যের প্রতি সহানুভূতি থাকা
আমরা যত দক্ষ, অভিজ্ঞ এবং চৌকস কর্মকর্তা হই না কেন, অন্যের অনুভূতির প্রতি যত্নশীল না হলে ওসব যোগ্যতা কোন কাজেই আসে না। ওগুলি বরং আত্মঅহংকারে ফুলিয়ে তোলে আমাদেরকে।
অন্যের অনুভূতির প্রতি গুরুত্ব না থাকলে ‘নিজেদের যোগ্যতা ও দক্ষতা’ কেবলই প্রতিপক্ষ তৈরি করে।
নিজেদের যুক্তি ও বুদ্ধিমত্তা দিয়ে আমরা মানুষকে মুগ্ধ করতে পারি, কিন্তু তারা আমাদের আচরণ দ্বারাই কেবল প্রভাবিত হয়। মানুষ আমাদের কথা শুনে, কিন্তু আচরণকে অনুভব করে। এই অনুভবই তাদের বেশি মনে থাকে।
অন্যের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব থাকলে, জীবনের অনেক কিছু সহজ হয়ে যায়। সবচেয়ে বেশি সহজ হয় যেটি, তা হলো সম্পর্ক।
অন্যকে আপন করতে পারা একটি বিরল মানবিক গুণ, যা মুহূর্তে আমাদেরকে অন্যের কাছে আকর্ষণীয় করে তোলে।
অন্যের প্রতি সহানুভূতি একটি বিশেষ গুণ। কর্মক্ষেত্রে একে দক্ষতা বলা হয়, কারণ নিজের চেষ্টা দিয়েই কেবল একে অর্জন করা যায়।

১) ঘুমের ওপর নিয়ন্ত্রণ থাকা
যোগ ব্যায়াম মানুষের দেহ ও মনকে সতেজ করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু দালাই লামা বলেছেন, ঘুমই সর্বোত্তম যোগ ব্যায়াম।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায় যে, যারা ঘুমের রুটিন মেনে চলতে সমর্থ হয়েছেন তারা শোয়া মাত্রই ঘুমিয়ে পড়তে পারেন। এবং সময়মতো ঘুম থেকেও ওঠতে পারেন। কর্মজীবীরা জানেন, এই অভ্যাস কত মূল্যবান।
যারা দিনের সময়টিতে সতেজ এবং ক্লান্তিহীন থাকতে চান, কেবল তারাই জানেন পর্যাপ্ত ঘুমাতে পারা কত ভালো একটি গুণ।
পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়ার বিষয়টি অনেকটাই ব্যক্তির অভ্যাসের ওপর নির্ভর করে। যারা রাতে ভালো ঘুমাতে চান, সাধারণত তারা বিকালের পর ক্যাফেইনযুক্ত কিছু পান করেন না। বিভিন্নভাবে শারীরিক খসরত বাড়িয়ে দেন। তাদের ধূমপানের অভ্যাস তাদের কম, অথবা নেই। তারা ঘুমের বেশ আগেই টিভি অথবা কম্পিউটারটি বন্ধ করে দেন।
কেউ কেউ বিছানার পাশে বই রাখেন। ঘুমের আগে প্রিয় বইটি পড়লে ঘুম আসতে পারে।
কিছু কারণ আছে প্রাকৃতিক। যেমন: কাজের চাপ থাকা, কোন ডেডলাইন সামনে থাকা, ব্যবসায়িক লোকসান। ইত্যাদি নানাবিধ দুশ্চিন্তা।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, কম ঘুমের কারণেই মানুষের দুশ্চিন্তা বেড়ে যায়। আবার দুশ্চিন্তা বেড়ে যাবার কারণেই কম ঘুম হয়।
যারা ঘুমকে দৈনন্দিন সকল কাজের মধ্যে মিলিয়ে নিতে পেরেছেন, তারাই কাজ এবং বিশ্রামকে আলাদা করতে পারেন। তাই আধুনিক কর্মজীবীরা ঘুমকে একটি দক্ষতা হিসেবে বিবেচনা করেছেন।
বিজনেস ইনসাইডার এবং লেখকের আরেকটি পোস্ট অবলম্বনে।
ছবিগুলো গুগল অনুসন্ধানের মাধ্যমে বিভিন্ন উৎস থেকে সংগৃহীত।
ঘুড়ি ব্লগ ব্লু চিপ স্টাটাস লাভের পথে এগিয়ে যাক সেই প্রত্যাশা রইল ……
শুভেচ্ছা নিন মইনুল ভাই ৷
মনোভাবের পরিবর্তন ঘটাতে হবে। ব্লগসাইট সম্পর্কে নিজের অভিজ্ঞতা, বিশ্বাস ও ধারণাকে ঢেলে সাজাতে হবে একবিংশ শতাব্দির বাস্তবতায়। দেশের অন্যান্য অলাভজনক এবং খুঁড়িয়ে চলা ব্লগসাইটগুলো থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নিয়ে আসতে হবে। ব্লগসাইটকে ১২ মাসের সুনির্দিষ্ট পরিচালনা দিয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করা যেই, এই তত্ত্বে বিশ্বাস করতে হবে। মনে রাখতে হবে, প্রিন্ট মিডিয়া আজ ক্ষয়িষ্ণু শিল্পে পরিণত হয়েছে এবং অনলাইন মিডিয়া এখন জ্যামিতিকভাবে ক্রমবর্ধমান।…
বাহঃ তাইতো..বিজ্ঞাপন পাওয়া গেলে আস্তে আস্তে যে কোন ব্লগ লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রুপান্তরীত হতে পারে। তখন ভাল লেখার রয়ালটি দেওয়া যেতে পারে লেখককে।লেখকদের কষ্টের পারিশ্রমিক ও মিলবে। এখন শুধু ব্লগে শুধু কমেন্টস করে প্রেরনা দেওয়া হয়।তাও মাঝে মাঝে ব্লগার সমাবেশ এত কম হয় …কমেন্টস ও খূঁজে পাওয়া যায়না।এ যদি হত নিঃসন্দেহে ব্লগার পাঠক সমাবেশ অনেক বেড়ে যেত ।ব্লগ হত অনেক প্রানবন্ত ..অনেক জনপ্রিয়। চলন্তিকার আনোয়ারুল হক খান কিন্তু চলন্তিকাকে এভাবে চালাচ্ছেন। যার লেখা ষ্টিকি হয় তাকে ,সেরা প্রদায়কদের পুরস্কার এর ব্যাবস্থা করছেন।তা কিন্তু তিনি নিজের পকেট থেকে করছেন । পত্রিকা প্রকাশ করছেন নিজের খরচে।আমি ,কাশেম ভাই টাকা অফার করা স্বত্বেও তিনি নেননি।উনি ও চেষ্টা করছেন বিজ্ঞাপন বাড়াতে।
খুব ভাল আইডিয়া মইনুল ভাই।ঘুড়িতে তো বরং চলন্তিকার তুলনায় বড় লেখকরা লিখছেন। কতৃপক্ষ অবশ্যই এ নিয়ে ভাবতে পারেন কিভাবে আস্তে আস্তে ব্যাবসায়িক দিকে নেওয়া যায়।এ তে দোষের কিছু নাই।কবি সাহিত্যকরা ও বাস্তব পৃথিবীর মানুষ।তাদের কে ও ডাল চাল কিনতে হয়।:P..
আর ও লিখতে ইচ্ছে হচ্ছে …সময় কম..আবার আসছি পরে।শুভকামনা এখনকার জন্য।
ব্লগে হিট বাড়ানোর জন্য চাই সুর্নিদিষ্ট রোডম্যাপ। চাই অ্যালেক্স রেটিং এর নিয়মিত বিশ্লেষণ। প্রথম লক্ষ্য হবে সকল ভালো মানের ব্লগারকে একত্রিত করা এবং দ্বিতীয় লক্ষ্য হবে সকল প্রকার পাঠকের মনযোগকে নিজেদের দিকে পরিচালিত করা। তৃতীয় লক্ষ্য হবে বিজ্ঞাপন দাতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা। এই তিন প্রকার হিট বাড়ানোর জন্য চেষ্টাও হবে তিন প্রকার। মাস এবং কোয়ার্টার ভিত্তিক হিট লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা এবং একই সাথে সমধর্মী ব্লগসাইটগুলোর হিট স্ট্যাটাস নজরে রাখা…*****************
আমি ও আশা করছি ঘুড়ি ব্লগ ব্লু চিপ ষ্ট্যাটাস অর্জনে এগিয়ে যাবে।অনেক ধন্যবাদ মইনুল ভাই ব্লগ সম্পর্কে পজিটিভ দৃষ্টিভঙ্গির জন্য। আপনার জন্য অনেক শুভকামনা ঘুড়ি ব্লগের সাথে সাথে। আপনরা দুজনে আস্তে আস্তে ব্লু আইকনে পরিনত হন এই কামনা রইল।
বর্তমান পৃথিবী হলো ‘যা নাই ইন্টারনেটে, তা নাই পৃথিবীতে’ তত্ত্বে বিশ্বাসী। খবরের কাগজের একটি লেখা বা প্রবন্ধ, দিনশেষে পত্রিকাটি ভাঁজ করলেই লেখার মৃত্যু ঘটলো। কিন্তু অনলাইনের একটি লেখা চিরজীবন্ত এবং রেফারেন্স করার জন্য সর্বদা প্রস্তুত। অন্যদিকে, এযুগের মানুষগুলো সবকিছু ইন্টারনেট থেকে পেতে আগ্রহী। নিজের মোবাইলটি খুঁজতে গেলেও তারা গুগল সার্চ দিতে চায়। অতএব, একটি ব্লগসাইটও লাভজনক আর্থিক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত হতে পারে। বিষয়টি পুরোপুরি নির্ভর করছে ব্লগ কর্তৃপক্ষের লক্ষ্যমাত্রা এবং ভবিষ্যতকে পরিমাপ করতে পারার সামর্থ্যের ওপর। সুর্নির্দিষ্টভাবে পরিকল্পনা করতে পারলে শুধু ব্লগসাইট যে লাভবান হবে, তা নয়। এখানে যারা প্রদায়ক হিসেবে যারা প্রতিদিন বিভিন্ন ক্যাটেগরিতে লেখে যাচ্ছেন, তারাও লাভবান হতে পারেন।
চমৎকার ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষন
শুভেচ্ছা সতত।
দারুণ প্রবন্ধ দারুণ
আগের মতোই চমৎকার তথ্যবহুল সিরিজ
ধন্যবাদ মইনুল ভাই ব্লুচিপস সম্পর্কে
অনেক কিছু জানার সুযোগ করে
দেবার জন্য।
১. নিজের মোবাইলটি খুঁজতে গেলেও তারা গুগল সার্চ দিতে চায়।
২. ‘যা নাই ইন্টারনেটে, তা নাই পৃথিবীতে’
একটি ভাল ব্লগ প্লাটফর্মের আশায় আমরা।
জানার নেই শেষ
জানার জন্য বড়োই সুন্দর
আহা আহা বেশ।
শুভেচ্ছা মইনুল ভাই
” একটি ব্লগসাইট কীভাবে ব্লু চিপ স্ট্যাটাস লাভ করতে পারে? তার আগে চলুন ভেবে নেই, সেরকম একটি ব্লগসাইটের কী কী বৈশিষ্ট্য থাকতে পারে। ব্লু চিপ ভূষিত ব্লগসাইট হবে জাতীয়ভাবে প্রতিষ্ঠিত, সর্বমহলের কাছে নির্ভরযোগ্য এবং আস্থাশীল একটি ব্লগিং ও নিউজ প্লাটফরম। সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো, সেটি হবে আর্থিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং লাভজনক একটি প্রতিষ্ঠান। স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে শুরু হলেও ব্লগসাইটটি ক্রমান্বয়ে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত হবে এবং মানসম্পন্ন লেখার জন্য তারা ব্লগারদেরকে রয়্যালটি দিতেও সক্ষম হবে। সেটি হবে নতুন, পুরাতন এবং পেশাদার ব্লগারদের মিলনমেলা। একই সাথে সংবাদমাধ্যম, তথ্যভাণ্ডার, সাহিত্য সম্ভার এবং রেফারেন্স গাইড।”
বৈশিষ্টগুলি পড়ে মনে হচ্ছে এর সবই থাকছে আমাদের ঘুড়িতে, প্রবন্ধটি তবে বাঁধাই করে রাখা হলো। জীবনের সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত হোক , প্রযুক্তির এই সংযোজন শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা জানবেন মইনুল ভাই।
// বর্তমান পৃথিবী হলো ‘যা নাই ইন্টারনেটে, তা নাই পৃথিবীতে’ তত্ত্বে বিশ্বাসী। খবরের কাগজের একটি লেখা বা প্রবন্ধ, দিনশেষে পত্রিকাটি ভাঁজ করলেই লেখার মৃত্যু ঘটলো। কিন্তু অনলাইনের একটি লেখা চিরজীবন্ত এবং রেফারেন্স করার জন্য সর্বদা প্রস্তুত। অন্যদিকে, এযুগের মানুষগুলো সবকিছু ইন্টারনেট থেকে পেতে আগ্রহী। নিজের মোবাইলটি খুঁজতে গেলেও তারা গুগল সার্চ দিতে চায়। অতএব, একটি ব্লগসাইটও লাভজনক আর্থিক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত হতে পারে। বিষয়টি পুরোপুরি নির্ভর করছে ব্লগ কর্তৃপক্ষের লক্ষ্যমাত্রা এবং ভবিষ্যতকে পরিমাপ করতে পারার সামর্থ্যের ওপর। সুর্নির্দিষ্টভাবে পরিকল্পনা করতে পারলে শুধু ব্লগসাইট যে লাভবান হবে, তা নয়। এখানে যারা প্রদায়ক হিসেবে যারা প্রতিদিন বিভিন্ন ক্যাটেগরিতে লেখে যাচ্ছেন, তারাও লাভবান হতে পারেন। //
খুবই মুল্যবান একটি লিখা । শুভকামনা ।
আপনার সাথ একমত ।
আর আমার মতে ব্লগ ভালভাবে চালানো কোন ব্যাপার না ।সবাই ভাল কন্টেন্ট পড়তে চায়।
প্রয়োজন খোলামন আর সদিচ্ছা র। ইউজাররা যাতে সহজে স্বচ্ছন্দে
ব্লগসাইট ব্যবহার করতে পারে তার ব্যবস্থা রাখা।
ঘুড়ি ব্লগ এখনো ইউজার ফ্রেন্ডলি হয়নি । তাই এখানে প্রাণপণে চাইলে ও মন বসাতে পারছি না।
আশা করি সঞ্চালকরা এসব বিষয় বিবেচনায় রাখবেন ।
বাংলা ভাষার ভূগোল ও ভোক্তা অনেক বিস্তৃত । এর ভেতরেও কেউ ব্যবসা করতে না জানলে এটা তার ব্যর্থতা ।
আসলে চলছে চলুক মানসিকতা দিয়ে বেশিদুর আগানো যায় না । ব্লগ এর ব্যাপারে এখনো সেই
মেন্টালিটি র প্রয়োগ দেখছি ।
ভাল থাকবেন মইনুল ভাই । ব্লগ সাইট ব্লু চিপস হোক । ব্লগীয় বাজার বুল মার্কেটে পরিণত হোক।