নীল জামা পড়া ওই নারী কে?
আদালত চত্বর থেকে বের হয়ে ভোঁ দৌড়! সম্মুখের ফটোসাংবাদিকেরা সেটিই ক্যামেরাবন্দি করে প্রকাশ করে দিলেন ইন্টারনেটে। ছবিটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়লো বিভিন্ন মাধ্যমে। রাতারাতি তারকাখ্যাতি! গুরুত্বপূর্ণ রায় বের হয়েছে, ট্রাম্প ও তার সহযোগীদের নির্বাচনকালীন অপরাধ নিয়ে। রায় কী হলো সেটি আর প্রশ্ন নয়, দৌড়ের ছবিটি কার সেটিই হয়ে গেলো খবর!
.
কেউ বলছে, অলিম্পিকে নাম লেখাবার জন্য এই চেষ্টা। জুতো আছে? হ্যাঁ আছে তো! হাতে কাগজপত্রও আছে? টিভির সংবাদকর্মী। আদালতে মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষেধ। তাই সর্বশেষ খবরটি সবার আগে দেবার জন্য তার এই চেষ্টা।
কেউ মন্তব্য করলেন, “বাহ, তবে সেই জুতোগুলো যত্ন করে রেখে দিন। পরবর্তি প্রজন্ম আপনার অসাধারণ কর্মজীবনের এই বিশেষ দিনের বাস্তবচিত্র উপলব্ধি করুক।” কেউ বলছে, কত প্রস্তুতি! তার প্রতি শ্রদ্ধা জেগে ওঠলো। মুক্ত গণমাধ্যমের এক প্রতীক হয়ে গেলেন সেই নারী। কে তিনি?
.
প্রশংসা ওখানেই শেষ নয়। একটি প্রখ্যাত জুতো কোম্পানি তার এথলেটিক সাংবাদিকতাকে শ্রদ্ধা জানাবার জন্য সহযোগিতা করার প্রস্তাবও দিয়ে দেয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের নৈতিকতার বিধি মোতাবেক, পেশাগত কাজের জন্য কোন প্রকার সুবিধা নিতে পারেন না।
.
কে সেই নারী? কোন প্রতিষ্ঠানের হয়ে সে কাজ করে? গত ২১সে অগাস্ট থেকে শুধু এই আলোচনা।
.
.
অবশেষে সেই নারী নিজেই উত্তর দিলেন। “হ্যা, সেই নীল জামা পড়ে যে সাংবাদিক দৌড়াচ্ছিল সে আমি। ক্যাসি সেমিয়ন। আপনাদেরকে ধন্যবাদ।”
.
ক্যাসি সেমিয়ন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এনবিসি’র একজন সাংবাদিক। তবে এখনও তিনি শিক্ষানবীস। শুধু যে পুরো সাংবাদিক সমাজ তাকে নিয়ে গর্বিত তা নয়, তাকে নিয়ে গর্বিত এনবিসি নিউজ। এনসিবি’র একজন সিনিয়র সাংবাদিক টুইট করে বললেন, সেমিয়নকে নিয়ে আমরা গর্বিত।

দৌড়ের শুরু। দেখুন কাকে বেশি ফোকাসড মনে হচ্ছে!
.
এই ঘটনায় শুধু ব্যক্তি নয়, প্রতিষ্ঠান হিসেবে সংবাদসংস্থা এনবিসিও সম্মানীত হয়েছে। অত্যন্ত কার্যকর উপায়ে। তাতে সন্দেহ নেই।
.
এটি হলো প্রাকৃতিক উপায়ে বিশ্বাসযোগ্য প্রচার! প্রতিষ্ঠানকে আর প্রতিষ্ঠানের পণ্য বা সেবাকে মানুষের কাছে পরিচিত করাবার জন্য আমরা কতই না চেষ্টা করে যাচ্ছি। লাখ লাখ কোটি কোটি টাকা খরচ করি বিজ্ঞাপনে আর পাবলিক রিলেশনে।
.
শত হাজার কর্মী থাকে একটি প্রতিষ্ঠানে। প্রত্যেকেরই উচিত নিজেদের মতো প্রতিষ্ঠানকে প্রতিনিধিত্ব করা। নিয়মিত হোক, অথবা অননিয়মিত হোক, প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি কর্মীর অবদান গুরুত্বপুর্ণ। নিরলসভাবে চেষ্টা করে গেলে কার চেষ্টায় একটি প্রতিষ্ঠান জেগে ওঠে বলা কঠিন। প্রতিষ্ঠানের কর্মীই সেরা বিজ্ঞাপন মাধ্যম!▲