ভালো লেখার গোপন রহস্য ফাঁস
ভালো লেখার তিনটি গোপন রহস্য আছে, তুমি তা জানো? এক অধ্যাপক জিজ্ঞেস করলেন তার ছাত্রকে। ছাত্র তো নির্বাক। ভাবছে স্যারের মনের কথা বলার জন্যই ভূমিকা করছেন। তাই ছাত্র অপেক্ষার দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে থাকলো স্যারের দিকে। শেষে জিজ্ঞেসই করতে হলো, স্যার আপনি কি তা জানেন? অন্য দিকে উদাসীন দৃষ্টি দিয়ে স্যার বললেন, নাহ, আমিও জানি না।
কৌতুকটি সমারসেট মমের মজার কথাটিকে স্মরণ করিয়ে দেয়। তিনি বলেছিলেন, উপন্যাস লেখার তিনটি কৌশল আছে। দুর্ভাগ্যবশত কেউই তা জানে না! এই হলো ভালো লেখার রহস্য; যা কেউ জানে না। অথচ কৌশল নিয়ে আমরা কত সময় নষ্ট করি। অনেকে লেখাই বন্ধ করে দেই!
লেখা নিয়ে খ্যাতিমান লেখকদের বৈচিত্রময় মনোভাব যেকোন পাঠককে আকৃষ্ট করে এবং চিন্তিতও করবে। ওল্ড ম্যান এন্ড দ্য সি-খ্যাত ঔপন্যাসিক হেমিংওয়ের ভাষ্যমতো, লেখক হবার জন্য লেখার কোন প্রয়োজন নেই। টাইপরাইটারের সামনে গিয়ে রক্তক্ষরণ করলেই তা হয়ে যাবে লেখা। লেখক হতে হলে ভাষাজ্ঞানের চেয়েও দরকারি বিষয় হলো একটি বিদগ্ধ হৃদয়।
লেখতে লেখতে শুধু লেখাই হয় না, আবিষ্কারও করা যায়। বেকনের ভাষায়, পড়া মানুষকে পরিপূর্ণ করে, সংলাপ মানুষকে প্রস্তুত করে আর লেখায় মানুষকে শুদ্ধ করে। কীভাবে একটি কবিতা শেষ হবে এই ভেবে রবার্ট ফ্রস্ট কখনো কবিতা লিখতে শুরু করেন নি। লেখতে লেখতে তিনি আবিষ্কার করেছিলেন নিজেকে।
কিন্তু কী লিখবো? আমার ছাত্রজীবনে এ প্রশ্নের উত্তরে আমার প্রিয় শিক্ষক বলেছিলেন, “কিছু যে লেখতে পারছো না, তা-ই লেখো।” আমি হাহাহা করে ওড়িয়ে দিয়েছিলাম। “লেখা বন্ধ করলেন তো লেখকের তালিকা থেকে বাদ পড়লেন (রে ব্যাডবেরি)।” কে শুনে কার কথা! আমিও শুনি নি। অন্যান্য সহপাঠিদের মতো, রচনা চিঠি আর প্যারাগ্রাফ সব মুখস্ত করেই পরীক্ষায় অবতীর্ণ হয়েছি!
সকলেই কিন্তু নজরুল জীবনানন্দ নন, কেউ কেউ মৃত্যুর পূর্বেও লেখক হয়ে বিদায় নেন, আর তা হয় কালোত্তীর্ণ। আপনার জীবনের গন্তব্য কী? এরকম প্রশ্নের জবাবে সদ্য অবসরপ্রাপ্ত এক সফল পাবলিক সার্ভেন্ট (বাংলায় সরকারি কর্মকর্তা) বলেছিলেন, “আমি এখন লেখালেখিতেই জীবন শেষ করতে চাই।” পাঠক থাকুক আর না-ই থাকুক, হিসেব করলে দেখবো যে, আমরা অনেকেই লেখক। হয়তো পাঠক ভিন্নতর হতে পারে; হয়তো গল্প উপন্যাস কবিতা পত্রিকা আর প্রবন্ধের পাঠকেরা যা পড়েন, তা সকলে লেখেন না।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ও এককালের সংবাদকর্মী স্যার উইনস্টন চার্চিল বলেছিলেন: রাজনীতি বা রাজনীতিবিদ নিয়ে আমি আর কিছুই করছি না। এই যুদ্ধ শেষ হলে সম্পূর্ণভাবে আমি লেখা আর আঁকায় মনোনিবেশ করতে চাই। অতএব চার্চিলের মতো সফল রাষ্ট্রনায়কের জীবনের গন্তব্য ছিলো লেখক হওয়া।
সকলেই লেখেন না, কেউ কেউ শুধু বলেই যান, আর অন্যে তা লেখে হয়ে যায় লেখক। কারও মুখের কথাই লেখা হয়ে যায় যদি তাতে ‘প্রাণ’ থাকে। “নেপোলিয়নের প্রতিটি কথা এবং তার লেখার প্রতিটি লাইন পড়ার মতো, কারণ তাতে আছে ফ্রান্সের প্রাণ।” বলেছিলেন অ্যামেরিকান প্রবন্ধকার র্যাল্ফ ওয়ালডো ইমারসন। এমন ব্যক্তিদেরকে মনে নিয়েই হয়তো বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন বলেছিলেন, “হয় পড়ার মতো কিছু লেখো, নয়তো লেখার মতো কিছু করো।”
**লেখাটি একটি পাবলিক ব্লগসাইটে প্রকাশিত হয়েছিলো (ডিসেম্বর ২০১২), যেখানে বিজ্ঞ পাঠকদের মন্তব্য রয়েছে! প্রথমে (অগাস্ট ২০১২) পোস্ট দেওয়া হয়েছিল প্রথম আলো ব্লগে, কিন্তু সেই ব্লগ এখন আর নেই।
বড়ভাই এটা আমার আইডি। আরো কতটা আছে আমি জানি না। বাংলা ব্লগ বানিয়েছিলাম কয়েক জন মিলে ব্লগিং করার জন্য। এক সাথে ২৫ জনে ব্লগিয় করা যায়।
LikeLike
বিগব্রাদার, ওয়ার্ডপ্রেসে এখানে অনেক সমস্যা হচ্ছে: ওপেন হলে লগেইন করা যায় না, লগইন করলে লেখা পোস্ট করা যায় না। প্রচুর সময় নষ্ট হচ্ছে। অন্য পৃষ্ঠায় যেতে চাইলে সারভার এরর দেখায়।
LikeLike
ধন্যবাদ। আপনার আইডিতে লাইক দিয়েছি। ফেইসবুক আইডিকেও এড করে দিলাম। শুভেচ্ছা বিগ ব্রাদার!!
LikeLike